গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীও দোয়া সমূহ
দোয়া শব্দের অর্থ আল্লাহকে ডাকা, কিছু চাওয়া, প্রার্থনা করা অর্থাৎ বিনয়ের সঙ্গে মহান আল্লাহর কাছে কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার থেকে বেঁচে থাকার জন্য প্রার্থনা করা।
Sponsored
এই দোয়াকে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা ইবাদত হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং সাহায্য লাভের মাধ্যম বানিয়েছেন। তাইতো পবিত্র কোরআন ও হাদীসে নবী করিম (সা.) এর মাধ্যমে মানুষকে দোয়ার বিষয়ে নির্দেশ তথা তাক্বীদ দিয়েছেন।
আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব, যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে তারা অচিরেই জাহান্নামে প্রবেশ করবে এবং লাঞ্ছিত হবে।’ (সূরা মু’মিন, আয়াত-৬০)
আল্লাহ তায়ালা মানুষকে কোনো মাধ্যম ছাড়াই রহমত বরকত মাগফেরাত দেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তাই আল্লাহর ঘোষণা অনুযায়ী তাকে ডাকলেই আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে সব কল্যাণ দান করবেন।
হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যে, মুসলমারা যখন অন্য কোনো মুসলমানের জন্য দোয়া করে, যার মধ্যে কোনোরূপ গোনাহ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা থাকে না। মহান আল্লাহ তা-আলা এই দোয়ার বিনিময়ে সেই মুসলমানকে তিনটির যেকোন একটি দান করেন।
০১। তার দোয়া দ্রুত কবুল হওয়ে থাকেন।
০২। তার প্রতিদান আখেরাতে দেয়ার জন্য রেখে দেন এবং
০৩। তার থেকে অনুরূপ বা একই রকমের আরেকটি কষ্ট দূর করে দেন।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু দোয়া নিচে দেয়া হল
০১। ইফতারের দোয়া
আর ইফতার করার সময় যে দোয়া প্রমাণিত, তা ইফতার করার পর পাঠ করতে হয়। ইবনে উমার রাঃ হতে বর্ণিত, নবী করিম সঃ ইফতার করলে এই দোয়া বলতেন,
আরবি উচ্চারণঃ
ذهب الظماء واتلت الغوق وثبت ألأجر إن شاء الله
বাংলা উচ্চারণঃ যাহাবা যামা-উ অবতাল্লাতিল উরুকূ অষাবাতাল আজরু ইনশা-আল্লাহ।
বাংলা অর্থ– পিপাসা দূরীভূত হল, শিরা-উপশিরা সতেজ হল এবং ইনশাআল্লাহ সওয়াব সাব্যস্ত হল।
ইফতারের সময় এই দোয়া সবচেয়ে সহীহ রূপে নবী সঃ হতে বর্ণিত হয়েছে। এ ছাড়া ইফতারের অন্যান্য দোয়া বিশুদ্ধরূপে প্রমাণিত নয়।
০২। দোয়া মাসুরা
দোয়া মাসুরা নামাজের শেষে পড়তে হয় । এই দোয়া পড়ে নামাজের সালাম ফেরানো হয়। নিচের এর আরবি , উচ্চারন ও বাংলা অর্থ বা অনুবাদ দেওয়া হলো । আশা করি আপনাদের কাজে আসবে।
আরবি উচ্চারণঃ اللّٰهُمَّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمْاً كَثِيْراً، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ
বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি যলামতু নাফসি যুলমান কাসিরা। ওয়ালা ইয়াগ ফিরুয যুনুবা ইল্লা আনতা ফাগফির লি। মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা। ওয়ার হামনি। ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম।
বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আমার নিজ আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি, গুনাহ মাফকারী একমাত্র আপনি ছাড়া কেউ নেই। অতএব আপনি আপনা নিজ গুনে আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার প্রতি দয়া করুন । নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
০৩। দোয়া ইউনুস
মহান আল্লাহ তা-আলার পয়গাম্বর হজরত ইউনুস (আঃ) দেশ ত্যাগ করে চলে যাওয়ার সময় তিনি নদীতে ঝাঁপ দিইয়েছিলেন এবং তিনি মাছের পেটে বন্দি হওয়ে যান। এই অবস্থায় বিপদে পড়ে তিনি আল্লাহর কাছে যে, দোয়া পড়েছিলেন আর সেই দোয়ার বরকতে বা রহমতে মহান আল্লাহ পাক তাকে এই মহাবিপদ থেকে উদ্ধার করেছিলেন, আর সেই দোয়াই হচ্ছে দোয়া ইউনুছ। নিচে দেওয়া হলঃ
আরবি উচ্চারণঃ
لَا إِلَـٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
বাংলা উচ্চারণঃ লা ইলাহা ইল্লা আংতা, সুবহানাকা ইন্নি কুমতুম মিনাজ জ্বালিমিন।
বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ তুমি ব্যতীত সত্য কোনো ইলাহ বা উপাস্য নেই, তুমি পুত ও পবিত্র, নিশ্চয় আমি জালিমদের দলভুক্ত।
০৪। আযানের দোয়া
আরবি উচ্চারণঃ
« ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺭَﺏَّ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺪَّﻋْﻮَﺓِ ﺍﻟﺘَّﺎﻣَّﺔِ، ﻭَﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺍﻟْﻘَﺎﺋِﻤَﺔِ، ﺁﺕِ ﻣُﺤَﻤَّﺪﺍً ﺍﻟْﻮَﺳِﻴﻠَﺔَ
ﻭَﺍﻟْﻔَﻀِﻴﻠَﺔَ، ﻭَﺍﺑْﻌَﺜْﻪُ ﻣَﻘَﺎﻣَﺎً ﻣَﺤﻤُﻮﺩﺍً ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻭَﻋَﺪْﺗَﻪُ، [ﺇِﻧَّﻚَ ﻟَﺎ ﺗُﺨْﻠِﻒُ ﺍﻟْﻤِﻴﻌَﺎﺩَ ]»
বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা রববা হা-যিহিদ্ দা ওয়াতিত্ তাম্মাতি ওয়াস সালা-তিল ক্বা- ইমাতি আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাদীলাতা ওয়াব্ আছহু মাক্বা-মাম
মাহমূদানিল্লাযী ওয়া আদতাহ, ইন্নাকা লা তুখলিফুল মী আদ।
বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আযান ও প্রতিষ্ঠিত নামাজের তুমিই একমাত্র প্রভু! মুহাম্মাদ (সাঃ) কে ওসীলা তথা জান্নাতের একটি স্তর এবং ফজিলত তথা সকল সৃষ্টির উপর অতিরিক্ত মর্যাদা দান করুন। আর তাঁকে মাকামে মাহমূদে (প্রশংসিত স্থানে) পৌঁছে দিন, যার প্রতিশ্রুতি তুমিই তাঁকে দিয়েছেন। নিশ্চয় আপনি প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম কর না। (বুখারী শরিফ হাদিস নং ১/২৫২ ও ৬১৪)
০৫। মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া
মানুষ মরণশীল এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম। এক আয়াতে মহান আল্লাহ তা-আলা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। এই পৃথিবী বাহ্যত অত্যন্ত সুখময় ও আকর্ষণীয় বলে মনে হয়। কিন্তু দুনিয়াটা আসলেই ছলনায় পরিপূর্ণ। অল্প কিছু দিনের এ দুনিয়ায় আমরা মেহমান মাত্র। আর আমাদের প্রত্যেকের উচিত হবে মৃত্যুর কথা স্মরণ করে। আর পুণ্য কাজে ধাপিত হওয়া ও অন্যায় থেকে দূরে থাকা।
একজন মৃত ব্যক্তিদের জন্য আমাদের করণীয় হলো, আমরা যেন সেই মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করি। মৃতদের জন্য আমরা পবিত্র কোরআনের এই দোয়াটি পরব।
আরবি উচ্চারণঃ
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَؤُوفٌ رَّحِيمٌ
বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহহুম্মাগ ফিরলাহু ওয়ারহামহু, ওয়া আফিহি ওয়া ফু আনহু ওয়া আকরিম নুযুলাহু, ওয়া ওয়াসসি মাদখালাহু ওয়াগসিলহু বিল মায়ি ওয়াস সালজি ওয়াল বারাদি, ওয়ানাক্কিহি মিনাল খাতা-ইয়া কামা ইউননাককাস সাওবুল আব ইয়াযু মিনাদদানাসি; ওয়াবদিলহু দা-রান খায়রান মিন দারিহি, ওয়া আহলান খাইরান মিন আহলিহি; ওয়া যাওজান খাইরান মিন যাওজিহি। ওয়া আদখিলহুল জান্নাতা, ওয়া আইজহু মিন আযাবিল কাবরি ওয়ামিন আযাবিন নার।
বাংলা অর্থঃ হে মহান আল্লাহ, এই মৃত ব্যক্তিকে বা তাকে ক্ষমা করুন ও তাকে দয়া করুন। শান্তিতে রাখুন ও তার থাকার স্থানটি বা জায়গাটি মর্যাদাশীল করুন। এবং তার কবরটি প্রশস্থ করে দিন। বরফ ও তুষারের শুভ্রতা দিয়ে, তাকে গুনাহ থেকে এমনভাবে পরিচ্ছন্ন করে দিন, যেমন ময়লা থেকে সাদা কাপড় পরিষ্কার হয়ে যায়। তাকে দুনিয়ার বাসস্থানের চেয়ে উত্তম বাসস্থান দিয়ে দিন, পরিবার ও তার সঙ্গী দান করে দিন, হে মাবুদ, তাকে জান্নাতে দাখিল করে দিন, তাকে কবর আজাব ও দোজখের আজাব থেকে রক্ষা করুণ। (মুসলিম শরিফ হাদিস নং- ২/৬৩৪)
০৬। রিজিক বৃদ্ধির দোয়া
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন একমাত্র রিজিকের মালিক। তিনি পালনকর্তা তিনিই রিজিকদাতা এবং এই পৃথিবীর মালিক। আর তাই আমরা তার কাছে রিজিকের জন্য প্রার্থনা করি। সূরা নুহ-তে মহান আল্লাহ তা-আলা তাঁর অনুগত বান্দাদের রিজিকে বরকত লাভের জন্য সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।
আল্লাহ তা-আলা বলেন, অতঃপর বলেছি, তোমরা তোমাদের পালন কর্তা বা প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয় তিনি অত্যন্ত বা খুব ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টিপাত করবেন এবং তিনি তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে সমৃদ্ধ করবেন ও তোমাদের জন্য উদ্যান স্থাপন করবেন এবং প্রবাহিত করে দিবেন নদী-নালা। (আয়াত ১০ও১২ সুরা নুহ)
কোর-আনের দিক নির্দেশনার আলোকে আমরা বুঝতে পারি যে, রিজিকে বরকত লাভের কোন-আনি আমল হলো আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। যারা নিয়মিত বেশি বেশি ইসতেগফার পড়বে তাদের জন্য রিজিকের দরজা উন্মুক্ত বা খুলে যাবে।
কয়েকটি ছোট ছোট ইসতেগফার সম্পর্কে আলোচলা করা হলঃ
১।
আরবি উচ্চারণঃ
(اَسْتَغْفِرُ الله)
বাংলা উচ্চারণঃ আসতাগফিরুল্লাহ
২।
আরবি উচ্চারণঃ
رَبِّغْفِرْ وَارْحَمْ وَ اَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِيْنَ-
বাংলা উচ্চারণঃ রাব্বিগফির, ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।
৩।
আরবি উচ্চারণঃ
ﺃَﺳْﺘَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺍﻟْﻌَﻈﻴﻢَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﻫُﻮَ ﺍﻟْﺤَﻲُّ ﺍﻟﻘَﻴّﻮُﻡُ ﻭَﺃَﺗُﻮﺏُ ﺇِﻟَﻴﻪِ
বাংলা উচ্চারনঃ আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম ওয়া আতুবু ইলাইহি।
বাংলা অর্থঃ আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ছাড়া ইবাদতের উপযুক্ত কোনো উপাস্য বা মাবুদ নেই। যিনি চিরস্থায়ী ও চিরঞ্জীব। আমি সেই মালিকের কাছেই তওবা করছি।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি এই দোয়া পড়বে আল্লাহ তা-আলা তাকে ক্ষমা বা মাফ করে দিবেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করার মতো অপরাধী হয় বা পাপ করে থাকে। (তিরমিজি শরিফ ও আবু দাউদ মিশকাত শরিফ)।
০৭। লম্বা হওয়ার দোয়া
লম্বা হওয়ার প্রথম আমল
প্রথমে আপনাকে তিন বার যে কোন দরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে। তারপর আপনাকে ৭০ বার ইয়া ফাত্তাহু পড়তে হবে। তারপর আবার তিন বার বিসমিল্লাহ সহিত সূরা ইখলাস পড়তে হবে । তারপর আবার শেষে তিনবার যে কোনো একটি দরুদ শরীফ পড়ে পানিতে ফু দিতে। এবং সেই পানি আপনাকে পান করতে হবে। মনে রাখতে হবে একবারে যতটুকু পানি পান করতে পারবেন গ্লাসে ততটুকুই পানি নেবেন। এই আমল আপনাকে দিনে দুইবার করতে হবে সকালে ফজরের নামাজের পরে একবার ও সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর আর একবার ।
লম্বা হওয়ার দোয়া বা দ্বিতীয় আমলঃ
প্রথমে তিনবার দরুদ শরীফ পড়তে হবে। এরপর তিনবার পবিত্র কুরআনের এই আয়াতটি পড়তে হবে।
আরবি উচ্চারনঃ
الر ۚ تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ الْمُبِينِ
বাংলা উচ্চারনঃ আলিফ-লাম-র, তিলকা আয়াতুল কিতাবিল মুবিন।
(সূরা ইউসুফ আয়াত নং-০১) এরপর তিনবার এই দোয়া পড়তে হবে।
আরবি উচ্চারনঃ
الرحيم،الرحيم،الرحيم،يا الله،يا مريد
বাংলা উচ্চারনঃ আর রহিমু, আর রহিমু, আর রহিমু, ইয়া আল্লাহু, ইয়া মুরিদু।
তারপর শেষে ৩ বার দরুদ শরীফ পাঠ করে পানিতে ফু দিয়ে সেই পানি পান করতে হবে। এই পানি আপনাকে ৩ নিঃশ্বাসে পান করতে হবে। সুন্নত তরিকা অনুযায়ী এই পানি পান করতে হবে।
০৮। ইফতার ও সাহরীর দোয়া
রমজান মাসে রোজা পালনের জন্য সাহরী ও ইফতারের যেমন গুরুত্ব আছে। ঠিক তেমনি রোজার নিয়ত ও ইফতারের সময় ইফতারের দোয়ার যথেষ্ট গুরুত্ব আছে। সুবহে সাদিকের আগে সাহরী খাওয়ার পর রোজা নিয়ত করা অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়।
রমজান মাসের রোজার নিয়ত নিচে দেওয়া হলঃ
আরবিতে উচ্চারণঃ
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
বাংলা উচ্চারনঃ নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম্মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আংতাস সামিউল আলিম।
বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের জন্য তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ করলাম। এতপর, আপনি আমার পক্ষ থেকে আমার রোজা তথা আহার থেকে বিরত থাকাকে আমাকে কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বজ্ঞানী ও সর্বশ্রোতা।
রমজান মাসে ইফতারের আগে বেশি বেশি করে ইসতেগফার পাঠ করতে হবে। নিচে কয়েকটি ইসতেগফার তুলে ধরা হলঃ
আরবি উচ্চারণঃ
اَسْتَغْفِرُ اللهَ الْعَظِيْم – اَلَّذِىْ لَا اِلَهَ اِلَّا هُوَ اَلْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَ اَتُوْبُ اِلَيْهِ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ الْعَلِىِّ الْعَظِيْم
বাংলা উচ্চারনঃ আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম, আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।
ইফতারের সময় হওয়ার সাথে সাথে ইফতারের জন্য এই দোয়া পাঠ করে ইফতার করতে হয়,
আরবি উচ্চারনঃ
َللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ وَ اَفْطَرْتُ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِيْمِيْن
বাংলা উচ্চারনঃ আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি একমাত্র তোমারি সন্তুষ্টির জন্য সাওম বা রোজা রেখেছি এবং তোমারি দেওয়া রিযিকের মাধ্যমে ইফতার করছি।
রমজান মাসে রোজা রেখে ইফতার করার পরে মহান রাব্বুল আলামিনের শুকরিয়া আদায় করতে হয়।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) যখন ইফতার করতেন তখন তিনি এই দোয়া পড়তেনঃ
আরবি উচ্চারণঃ
ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ
বাংলা উচ্চারনঃ জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরূ ইনশাআল্লাহ।’
বাংলা অর্থঃ ইফতারের মাধ্যমে পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো। (আবু দাউদ, মিশকাত শরিফ)
মহান আল্লাহ তা-আলা আমাদের সকল মুসলিম জাতিকে বা উম্মাহকে রমজান মাসে সাহরির পরে নিয়ত করা ও ইফতারের আগে বেশি বেশি তাওবা এবং ইসতেগফার করা, ইফতারের সময় ছোট ছোট দোয়া পড়া এবং ইফতারের পর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
০৯। আয়না দেখার দোয়াঃ
মানুষের দেহের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দরতম অঙ্গ হলো মুখমন্ডল। আমরা প্রতিদিন কমপক্ষে একবার হলেও আয়নার সামনে গিয়ে নিজের চেহারা বা মুখমন্ডল দেখি। রাসুলুল্লাহ (সা) ও আয়নায় তিনি তার মুখমন্ডল দেখতেন। তিনি আয়না দেখার সময় দোয়া পড়তেন। তাই আমরা যখন আয়নার সামনে যাব তখন আই আয়না দেখার দোয়া টি পড়বো।
আরবি উচ্চারণঃ
اللهم حسنت خلقي فحسن خلقي
বাংলা উচ্চারনঃ আল্লাহুম্মা হাসসানতা খালকী, ফা হাসসিন খুলুকী
বাংলা অর্থঃহে আল্লাহ! তুমি আমার চেহারাকে যেমন সুন্দর করেছো ঠিক তেমনি আমার চরিত্রকে ও সুন্দর করে দাও।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) আয়না দেখার সময় এই দোয়া পড়তেন।
ব্যথার দোয়াঃ
আমরা ইসলাম ধর্মালম্বী মানুষ। আমাদের ধর্ম ইসলাম। আমরা আমাদের সকল প্রয়োজন শুধুমাত্র আল্লাহর কাছেই জানাবো। যেকোন কিছুর দরকার হলে আমরা আল্লাহর কাছে চাইবো। আল্লাহর কাছে চাইলে আল্লাহ বান্দার প্রতি খুশি হন এবং তিনি বান্দার দোয়া কবুল করেন। আমাদের প্রিয় নবী করিম (সা) বলেছেন, দোয়া ই ইবাদত। আমাদের শরীরে যেকোন স্থানে ব্যথা অনুভব হলে আমরা দোয়ার মাধ্যমে পানাহ চাইবো। আসুন আজকে জেনে নেয়া যাক শরীরে যে কোন্ন স্থানে ব্যথা হলে কি পড়বো-
আরবি উচ্চারণঃ
أَعُوذُ بِاللَّهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ
বাংলা উচ্চারনঃ আ‘ঊযু বিল্লা-হি ওয়া ক্বুদরাতিহী মিন শাররি মা আজিদু ওয়া উহা-যিরু
বাংলা অর্থঃ এই যে ব্যথা আমি অনুভব করছি এবং যার আমি আশঙ্কা করছি, তা থেকে আমি আল্লাহ্র এবং তাঁর কুদরতের আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
ব্যথার দোয়া পড়ার নিয়মঃ শরীরের যে স্থানে ব্যথা সেই স্থানে হাত রেখে প্রথমে তিনবার বিসমিল্লাহ পড়তে হবে। তার পর সাত বার উল্লিখিত দোয়া পাঠ করবে ও সেই স্থান মর্দন করবে।
ঘুমানোর আগে ও ঘুম থেকে উঠার দোয়াঃ
ঘুম ও একজন মুসলিম এর জন্য ইবাদত। যদি সেই ঘুম আল্লাহ ও তার রাসুল(সা) এর অনুকরনে হয়। হজরত হুযাইফাহ (রা) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) রাতের বেলায় ঘুমানোর জন্য বিছানায় শোয়ার সময় তিনি তার হাত গালের নিচে রাখতেন। আর ঘুমানোর দোয়া পড়তেন। তার পর যখন তিনি ঘুম থেকে উঠতেন তখন তিনি আবার দোয়া পাঠ করতেন যেটা ঘুম থেকে উঠে পড়তে হয়।
ঘুমানোর দোয়াঃ
আরবি উচ্চারণঃ
اَللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا
বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া।
বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনার নামেই মারা যাই আবার আপনার নামেই জীবিত হই।
ঘুম ভাঙ্গার পর ঘুম থেকে উঠে এই দোয়া পড়তে হয়ঃ
আরবি উচ্চারণঃ
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ
বাংলা উচ্চারণঃ আলহামদু লিল্লাহিল লাজি আহইয়ানা বা’দা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর।
বাংলা অর্থঃ সকল প্রশংসা সেই মহান আল্লাহর জন্য, যিনি মৃত্যুর পর আমাদের জীবন দান করেছেন এবং তারই দিকে আমাদের পুনরুত্থান।
ঘুম থেকে উঠে এই দোয়া পাঠ করলে সারা দিন তার ভাল কাটবে। হে আল্লাহ আমাদের সকলকে এই সমস্ত আমল করার তৌফিক দান করুন আমিন।
১২। তারাবির সালাতের দোয়াঃ
তারাবিহ চার রাকাআত সালাতের পর নির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই। তবে আমাদের জীবনের গুনাহ মাফের জন্য আল্লাহর কাছে তাওবা এবং ইসতেগফারের কোন বিকল্প নেই।
তবে আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত রমজান মাসের একটি দোয়া রয়েছে, যা তারাবিহ নামাজে পড়া হয়। আর এ দোয়াটি প্রত্যেক রোজাদার ব্যক্তি মুখস্ত করে থাকে। এ দোয়াটি প্রতি ৪ রাকাআত পর পর পড়া হয়ে থাকে।
আরবী উচ্চারনঃ
سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ
বাংলা উচ্চারণঃ সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আজমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামুওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ, সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।
বাংলা অর্থঃ আল্লাহ পবিত্রময় সাম্রাজ্য ও মহত্ত্বের মালিক। তিনি পবিত্রময় সম্মান মহত্ত্ব ও প্রতিপত্তিশালী সত্তা। ক্ষমতাবান, গৌরবময় ও প্রতাপশালী তিনি পবিত্রময় ও রাজাধিরাজ যিনি চিরঞ্জীব, কখনো তিনি ঘুমায় না এবং তিনি মৃত্যুহীন সত্তা। তিনি পবিত্র ও বরকতময় আমাদের প্রতিপালক, ফেরেশতাকুল সহ এবং জিবরাইল (আ.) এর প্রতিপালক।
১৩। অযুর দোয়াঃ
বাংলা উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহিল আলিয়্যিল আজীম। ওয়াল হামদুলিল্লাহি আলা দ্বীনিল ইসলাম। আল ইসলামু হাক্কুন। ওয়াল কুফরু বাতিলুন। ওয়াল ইসলামু নুরুন। ওয়াল কুফরু জুলমাত।
আরবী উচ্চারণঃ
بسم الله العلي العظيم والحمد لله علي دين الاسلام الاسلام حق والكفر باطل الاسلام نور والكفر ظلمة
বাংলা অর্থঃ সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বমহান আল্লাহর নামে অজু শুরু করছি।
১৪। মাথা ব্যথার দোয়াঃ
মানব দেহের জন্য মাথা ব্যথা অনেক কষ্টের একটা যন্ত্র বা অংগ। একজন মানুষ সারাদিন মাথা ব্যথা নিয়ে কাজ করতে বেশ অস্বস্তিকর বোধ করে।
মাথা ব্যথার কারণে মানুষ স্বাভাবিক কাজ ও অল্প পরিশ্রমের কাজ গুলোও করতে পারে না। তাই আমাদের সুস্থ ও আরামদায়ক জীবন যাপনে মাথা ব্যথাসহ অন্যান্য সব ধরনের রোগ থেকে সুস্থ থাকা
খুবই দরকারী। নিচে মাথা ব্যথার দোয়াটি তুলে ধরা হলো,
আরবি উচ্চারণ :
لَّا يُصَدَّعُونَ عَنْهَا وَلَا يُنزِفُونَ
বাংলা উচ্চারণঃ লা ইউসাদ্দাউনা আনহা ওয়া লা ইয়ুংযিফুন। (সূরা ওয়াকিয়া আয়াত নং ১৯)।
যেভাবে এ দোয়াটি পড়বেন: যখন কারো মাথা ব্যথায় হবে। তখন তিনি তার ডান হাত দিয়ে মাথা চেঁপে ধরে ৩ বার এই দোয়াটি পাঠ করবে। ইনশাআল্লাহ!তিনি মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন।
১৫। জায়নামাজের দোয়াঃ
জায়নামাজের দোয়া নামাজের স্থানে দাড়িয়ে পড়তে হয়। জায়নামাজের দোয়ার আরবি উচ্চারণ, বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থ নিচে তুলে ধরা হয়েছে আশা করি আপনাদের সবার উপকারে আসবে।
আরবী উচ্চারণঃ
اِنِّىْ وَجَّهْتُ وَجْهِىَ لِلَّذِىْ فَطَرَالسَّمَوَتِ وَاْلاَرْضَ حَنِيْفَاوَّمَااَنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ
বাংলা-উচ্চারনঃ ইন্নি ওয়াজ্জাহাতু ওজহিয়া লিল্লাযী ফাতারাচ্ছামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাঁও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন ।
বাংলা অর্থঃ নিশ্চই আমি তাঁহার দিকে মুখ ফিরাইলাম, যিনি এই অসীম আসমান জমিন সৃষ্টি করিয়াছেন । আমি মুশরিকদের দলভুক্ত নই।
১৬। সন্তানের জন্য দোয়াঃ
সন্তানের প্রতি প্রতিটি বাবা মা সব সময় তাদের মঙ্গলের জন্য আল্লার কাছে দোয়া করে থাকে। তার উৎকৃষ্ট উদাহরন দেখিয়ে দিয়েছেন আমাদের মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সাল্লাম, যখন তিনি তার প্রাণ প্রিয় সন্তান ও স্ত্রীকে জনমানবহীন মরুভূমি মক্কার সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের উপত্যকায় রেখে যান। তখন তিনি আল্লাহর কাছে তাদের জন্য কল্যাণের দোয়া করেছিলেন। আর এই দোয়াটি মহান আল্লাহ তাআলা কবুল করেন এবং পছন্দ করেন। আল্লাহ তাআলা তার পবিত্র কুরআনে সে দোয়াটি পুনরায় উল্লেখ করে দুনিয়ার মানুষকে তাদের সন্তানদের জন্য এই ভাবে দোয়া করতে বলেন। আর যাতে মানুষ তাদের সন্তানদের জন্য এভাবে দোয়া করেন।
আরবী উচ্চারণঃ
رَبَّنَا لِيُقِيمُوا الصَّلَاةَ فَاجْعَلْ أَفْئِدَةً مِّنَ النَّاسِ تَهْوِي إِلَيْهِمْ وَارْزُقْهُم مِّنَ الثَّمَرَاتِ لَعَلَّهُمْ يَشْكُرُونَ
বাংলা-উচ্চারনঃ রাব্বানা লিয়ুক্বিমুস সালাতা ফাঝআল আফ্ইদাতাম মিনান নাসি তাহ্ওয়ি ইলাইহিম ওয়ারযুক্হুম মিনাছ ছামারাতি লাআল্লাহুম ইয়াশকুরুন। (সুরা ইবরাহিম আয়াত নং ৩৭)
বাংলা অর্থঃ হে আমার প্রতিপালক! তারা (সন্তান ও সন্তুতি) যাতে নামাজ প্রতিষ্ঠা করে। কাজেই তুমি মানুষের অন্তরকে তাদের প্রতি অনুরাগী করে দাও। আর ফল ফলাদি দিয়ে তাদের জীবিকার ব্যবস্থা করে দাও। আর যাতে তারা( সন্তান সন্তনি) আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করতে পারে।
১৭। আল্লাহর কাছে সাহায্যের জন্য দোয়াঃ
আল্লাহর অশেষ মেহেরবান। তার নিয়ামতের শেষ নেই। তিনি গাফুরুর রাহিম,রহমানুর রহীম তার দয়ার কোন শেষ নেই। মুমিন বান্দা ভাল মনে ও উদ্দেশে আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে মহান আল্লাহ তাআলা তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না।তাই আল্লাহর সাহায্য লাভ করতে হলে তাঁরই শেখানো ভাষায় প্রার্থনা করা ছাড়া আমাদের আর অন্য কোন পথ নেই। আল্লাহ তাআলা তার বান্দার দোয়া কবুল করে নেবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। কুরআনে এসেছে,
আরবী উচ্চারণঃ
فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْغَمِّ وَكَذَلِكَ نُنجِي الْمُؤْمِنِينَ
অতপর আমি তাঁর (নবি ইউনুসের) আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাঁকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিলাম। আমি এমনি ভাবে বিশ্ববাসীদেরকেও মুক্তি দিয়ে থাকি।’ (সুরা আম্বিয়া আয়াত নং ৮৮)
আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিকনির্দেশনাও এমনই। তিনি হাদিসে পাকে দোয়া ইউনুসের কবুলিয়ত সম্পর্কে ঘোষণা দেন হজরত সাদ ইবনু আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলার নবি ইউনুস আলাইহিস সালাম মাছের পেটে থাকাকালে যে দোয়াটি করেছিলেন, সেই দোয়াটি হলো‘তুমি ব্যতিত কোনো মাবুদ নেই, তুমি অতি পবিত্রময় স্রষ্টা। আমি নিশ্চয়ই জালিমদের দলভুক্ত’ (সুরা আম্বিয়া আয়াত নং ৮৭) যে কোনো মুসলিম ব্যক্তি যে কোনো বিপদের সময় কখনো এই দোয়াটি পড়লে অবশ্যই আল্লাহতাআলা তার (ইউনুস ) দোয়া কবুল করে নেবেন। (তিরমিজি, তালিকুর রাগিব ও মিশকাত)
সরাসরি আল্লাহ তাআলার সাহায্য লাভের পরিচিত দোয়াটি হলো,
আরবী উচ্চারণঃ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
বাংলা উচ্চারনঃ লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা, ইন্নি কুনতু মিনাজ জ্বালিমিন।
বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ ! আপনি ছাড়া আমাদের আর কোনো মাবুদ নেই (যার কাছে দয়া, ক্ষমা ও সাহায্য চাওয়া যায়)। তুমি পাক ও পবিত্র। আমি জালিম, আমিই পাপী।
সুতরাং, চরম বিপদে হজরত ইউনুস আলাইহিস সালামের সাহায্য চাওয়ার দোয়াটি পড়লে মহান আল্লাহ তাআলা ওই বান্দার প্রার্থনা অবশ্যই কবুল করে নেবেন। কেননা, মহান আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন, তার প্রেরিত নবী হযরত ইউনুস আলাইহিস সালামের প্রার্থনা কবুল করে নেয়ার পাশাপাশি মুমিন বিশ্বাসীদের প্রার্থনা কবুল করে নেয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন।
১৮। ঘরে প্রবেশের দোয়াঃ
কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘরে প্রবেশের সময় সুন্নাত আমল সমূহের মধ্যে অন্যতম হলো, সালাম দেয়া, দোয়া পড়া, জিকির-আজকার করা এবং মেসওয়াক করা। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী বাড়িতে প্রবেশের সময় এ দোয়াটি পড়তে হয়,
আরবী উচ্চারণঃ
بِسْمِ اللَّهِ وَلَجْنَا، وَبِسْمِ اللَّهِ خَرَجْنَا، وَعَلَى اللَّهِ رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا
বাংলা উচ্চারনঃ বিসমিল্লাহি ওয়ালাঝনা, ওয়া বিসমিল্লাহি খারাঝনা, ওয়া আলাল্লাহি রাব্বিনা তাওয়াক্কালনা।
বাংলা অর্থঃ আল্লাহ্র নামে আমরা ঐ ঘরে প্রবেশ করলাম, আর আল্লাহর নামেই আমরা ঐ ঘর থেকে বের হলাম এবং আমাদের মালিক আল্লাহ্ তাআলার উপরই আমরা ভরসা করলাম।’ অতপর ঘরের লোকদের সালামদিয়ে ভিতরে প্রবেশ করা।’ (হাদীস আবু দাউদ)
ইনশাআল্লাহ্ আমরা সঠিক সময়ে সঠিক দোয়া পরে আল্লাহর কাছে পানা চাইব ।
আর ও পড়তে পারেন
দারিদ্রতা থাকার কারণ । যে কারণে অভাব দূর হয় না-দারিদ্রতা দূর করার আমল ।