মহাবীর খালিদ বিন ওয়ালিদের মৃত্যুশয্যায় শেষ কথাগুলো
মহাবীর খালিদ বিন ওয়ালিদের মৃত্যুশয্যায় শেষ কথাগুলো
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানীতে ভালো আছেন। আমিও মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। এই পৃথিবীতে যুগে যুগে অনেক মহাযোদ্ধা মহাবীর চলে এসেছেন, তেমনি আমাদের ইসলামিক শাসনে অনেক মহাবীর এসেছিলেন।
Sponsored
দুনিয়ায় তারা ইসলাম বিজয় করেছেন। দুনিয়াতে ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন তাদের নিজের জীবনের মধ্য দিয়ে।। যুগে যুগে নবী রাসুলের সময় থেকে যে মহাবিরা ইসলামের জন্য যুদ্ধ করে গেছেন। ইসলামের জন্য মহাবীর দুনিয়াতে এসেছিলেন। তেমনি একজন মহাবীর কে নিয়ে আজকে আমরা আলোচনা করব।
আজকে আমরা জানবো সেই মহাবীরের মৃত্যুশয্যায় শেষ কথাগুলো। চলুন জেনে নেয়া যাক সেই মহাবীরের মৃত্যু শয্যায় শেষ কথাগুলো। খালিদ বিন ওয়ালিদ ইসলাম শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যে মহাবীরেরা যুগে যুগে এসেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হচ্ছেন খালিদ বিন ওয়ালিদ। মৃত্যুশয্যায় খালিদ বিন ওয়ালিদ দুর্বল কন্ঠে তার স্ত্রীকে বিছানার পাশে বসতে বললেন -কারণ খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর জানা বাকি রয়ে গেছে।
খালিদ বিন ওয়ালিদ যার নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী 100 টিরও বেশী যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। এবং কোনটি যুদ্ধে পরাজিত হন নি মুসলমানেরা। তার রণকৌশল বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনীতে পাঠ্য হিসেবে শেখানো হয়। তার নামে মুসলিম দেশগুলোর সামরিক বাহিনীতে আজও ব্রিগেড, যুদ্ধবিমান, নৌযান রয়েছে।
সেই খালিদ বিন ওয়ালিদ যাকে মহানবী(স) সাইফুল্লাহ উপাধি দিয়েছিলেন। সাইফুল্লাহ শব্দের অর্থ আল্লাহর তরবারী। খলিফা ওমর ইবনুল খাত্তাবের নির্দেশে বিনা বাক্যব্যয়ে সেনা প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে সাধারণ যোদ্ধা হিসেবে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ইসলামে বলা হয়েছে নেতার নেতৃত্বে মানতে হবে এটা অনেক বড় ধরনের একটা আনুগত্য। এইসব গুণেই খালিদ বিন ওয়ালিদ এর মধ্যে ছিল।
মৃত্যুশয্যায় খালিদ বিন ওয়ালিদ তার স্ত্রীকে বললেন -আমার মনে হচ্ছে না আমি আর বেশিক্ষণ বেঁচে থাকব। আফসোস এই বিদায় বেলায় ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে। তুমি কি একটা উত্তর দিতে পারো? খালিদের স্ত্রী বিনয়ের সাথে বললেন হে মহাবীর কি প্রশ্ন আপনার? 57 বছর বয়সের মহাবীর খালিদ বললেন, তুমি আমার সারাটা শরীর পরীক্ষা করে দেখতো?
এমনকি কোন স্থানে রয়েছে যেখানে শত্রুর তরবারীর আঘাত নেই? দীর্ঘক্ষন পরীক্ষার পর খালিদের স্ত্রী তাকে বললেন যে, হে মহাবীর আপনি এত পরিমান আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে গেছেন যে আপনার সারা শরীরে শত্রুর তরবারীর দাগ রয়েছে। খালিদ বিন ওয়ালিদ বললেন আল্লাহর কসম প্রতিটি যুদ্ধের ময়দানে আমি আল্লাহর কাছে চাই যেন আমি শত্রু তরবারির আঘাতে শহীদ হয়ে যাই।
আমিতো শহীদি মৃত্যু চাই। কিন্তু আফসোস আমার যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যু না হয়ে মৃত্যু হচ্ছে বিছানায়। তখন তার স্ত্রী তাকে বললেনঃ হে মহাবীর আপনাকে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাইফুল্লাহ উপাধি দিয়েছিলেন অর্থাৎ আপনার উপাধি ছিল আল্লাহর তরবারী। হে মহাবীর আপনি বলুন এমন কোন কি শত্রু রয়েছে যে আল্লাহর তরবারী কে হারাতে পারে।
তখন এই কথা শুনে খালিদ বিন ওয়ালিদ অনেক খুশি হলেন। বুঝতে পারলেন আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি কিছুক্ষণ পরে শান্তির রাস্তা বেহেস্তে চলে যাবেন ইনশাল্লাহ।